যারা অল্প মূল্যে বেশি ফ্যাসালিটি আশা করে থাকেন তাদের জন্য ইনফিনিক্স এর এই মোবাইল ফোনটি খুব ভালো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে । ইনফিনিক্স এই নতুন স্মার্টফোনটি আজকে ভারতের বাজারে লঞ্চ করেছে । ইনফিনিক্স এর প্রতিটি স্মার্টফোন ভালো মানের ফিচার দিয়ে থাকে । উদাহরণস্বরূপ ইনফিনিক্স হট টেন প্লে মডেলটির কথাই বলা যাক । স্বল্পমূল্যের ভিতরে থাকা সত্ত্বেও এই মডেলটিতে পাওয়া যাবে উন্নত মানের ফ্যাসিলিটি । হাই কোয়ালিটির ফিচার ও দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের জন্য এই মডেলটির ব্যাপক চাহিদা মার্কেটে লক্ষ্য করা যায় । মডেলটি সম্পর্কে এক নজরে জেনে নেয়া যাক ।
বডি বিল্ড ডেকারেশন
স্মার্টফোনের বডি ডেকোরেশন এর উপর লক্ষ্য করলে আমরা দেখতে পাবো সম্পূর্ণ বডি প্লাষ্টিক ফ্রেমে আবদ্ধ । এছাড়াও আন্ডার বডিতে প্যাটার্ন ডিজাইন । প্যাটার্ন ডিজাইনটি স্মার্টফোন থেকে একটি গর্জিয়াস অথবা প্রিমিয়াম লুক দিতে সফলতা লাভ করেছে । স্মার্টফোনটি ওজনে 210 গ্রাম । যা আমাদের কাছে শুনতে কিছুটা ভারী মনে হলেও ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনেকটাই ব্যবহারযোগ্য হাতে অথবা পকেটে । দেশের মার্কেটপ্লেসগুলোতে এই স্মার্টফোনটি কালো , সবুজ এবং নীল কালার ছাড়াও আরো অন্যান্য রঙের পাওয়া যাচ্ছে । আকারের ক্ষেত্রে স্মার্টফোনটি মিডিয়াম বলা যেতে পারে ততটা বড় নয় এবং ততটা ছোট নয় । প্রথম দেখাতে কিন্তু আপনি মুগ্ধ হয়ে যেতে পারেন এই স্মার্টফোনটির বডি ডিজাইনের উপর । বডি ডিজাইনের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে গ্লাসি ফিনিশিং । সুরক্ষিত করার জন্য বডিতে কোন প্রটেক্টর এর তথ্য পাওয়া যায়নি ।
ক্যামেরা ফিচার
প্রথম দেখাতে আপনি হয়তো মনে করতে পারেন এই স্মার্টফোনটিতে ট্রিপল রেয়ার ক্যামেরা ব্যবহার করা হয়েছে । কিন্তু ভালোভাবে লক্ষ্য করার পরে আপনি অনেকটাই বোকা হয়ে যাবেন । স্মার্ট ফোনটিতে দেওয়া হয়েছে ডুয়েল ক্যামেরা সেটআপ । ডুয়েল ক্যামেরার সাথে যে ক্যামেরাটি ব্যবহার করা হয়েছে সেটি মূলত ক্যামেরা নয় মনোযোগ সহকারে দেখা যাবে সেখানে কেবল মাত্র এইআই লেখা রয়েছে কিন্তু মূলত ক্যামেরা সেন্সর নয় । ডুয়েল ক্যামেরার নিচে আলাদা ভাবে ব্যবহার করা হয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশ লাইট । প্রাইমারি ক্যামেরার সেন্সরে রয়েছে 13 মেগাপিক্সেল এর একটি ক্যামেরা এবং এর পাশাপাশি depth সেন্সরে রয়েছে 2 মেগাপিক্সেলের আরো একটি ক্যামেরা । স্মার্টফোনটির ফ্রন্ট ক্যামেরায় একটি বড় মাপের ক্যামেরা আইকন ব্যবহার করা হয়েছে যার ফাংশনে রয়েছে 8
মেগাপিক্সেল । প্রাইমারি এবং ফ্রন্ট ক্যামেরা দিয়ে এইচডিআর এবং পানোরামা এর মতো জনপ্রিয় ফিচার পাওয়া যাবে ।
ব্যাটারি ব্যাকআপ
স্মার্টফোনটিকে অনেকেই মার্কেটের ব্যাটারি কিং বলে অভিহিত করেছে । স্মার্টফোনের ব্যাটারি ক্যাপাসিটিতে রয়েছে 6000 mAh পাওয়ার । স্বল্পমূল্যের এই স্মার্টফোনটিকে কিন্তু অনেকটা হাই কোয়ালিটির ব্যাটারি ব্যাকআপ দেওয়া হয়েছে । ব্যাটারি পারফরম্যান্সের জন্য এই স্মার্টফোনটি মার্কেটের সেরা বলে নির্বাচিত । এই বাজেটের মধ্যে হাই কোয়ালিটির ব্যাটারি পারফরম্যান্স ইনফিনিক্স লাভারদের কাছে অনেকখানি অনাকাঙ্ক্ষিত ছিল । non-removable লিথিয়াম পলিমার টাইপের ব্যাটারীতে 10 ওয়াট দ্রুতগতিতে চার্জিং সিস্টেম
রয়েছে । ওয়্যারলেস অথবা তারবিহীন চার্জিং সিস্টেম এর কোন আভাস পাওয়া যায়নি । ব্যাটারি পাওয়ার এর কথা শুনে অনেকেই হয়তো বুঝতে পারছেন ব্যাটারি ব্যাকআপ স্মার্টফোনের মাধ্যমে কেমন পাওয়া যাবে । স্মার্টফোনের ব্যাটারি চার্জ হতে বেশি সময় নেবে না এবং ফুল চার্জ হয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘক্ষন ব্যবহার করার সুযোগ রয়েছে ।
অপারেটিং সিস্টেম এবং প্রসেসর
সব থেকে আকর্ষনীয় যে বিষয়টি সেটি হচ্ছে এই স্মার্টফোনের অপারেটিং সিস্টেমে রাখা হয়েছে অ্যান্ড্রয়েড টেন গো ভার্সন । অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন গুলোর মধ্যে খুব কম মডেল রয়েছে যেগুলোতে গো ভার্সন ব্যবহার করা হয়ে থাকে । যাইহোক এই স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে কিন্তু আমরা পেয়ে যাবো এন্ড্রয়েড ভার্সন । প্রসেসর এর কথা বলতে গেলে সবার আগেই মনে পড়ে যায় অক্টাকোর এর মতো জনপ্রিয় এবং আকর্ষনীয় প্রসেসর । এই স্মার্টফোনটি প্রসেসরে আমরা অক্টাকোর দেখতে পাবো । অক্টাকোর এর মত প্রসেসর ব্যবহার করার কারণে এই স্মার্টফোনটির অপারেটিং সিস্টেমের ভ্যালু অনেকটাই বেড়ে যাবে । মিডিয়াটেক হেলিও G25 ব্যবহার করা হয়েছে চিপসেটে । স্মার্টফোনটির টেকনোলজি 12 ন্যানোমিটার এর উপর বডি বিল্ড করা হয়েছে । গুগল প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ ডাউনলোড , ইনস্টল এবং আপডেট করার সুযোগ থাকবে ।
সিকিউরিটি সিস্টেম
সিকিউরিটি পদক্ষেপের জন্য এই স্মার্টফোনের জনপ্রিয়তা অনেকটাই বেশি লক্ষ্য করা যাবে । কম দামের থেকে শুরু করে হাই কোয়ালিটির প্রায় প্রতিটা স্মার্টফোনে কিন্তু আমরা সিকিউরিটি সিস্টেম দেখতে পাই । স্মার্টফোন গুলোতে থাকা সিকিউরিটি পদক্ষেপের মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় এবং আকর্ষণীয় একটি পদক্ষেপ হলো মাল্টিপল ফিঙ্গারপ্রিন্ট সিস্টেম । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটিকে সেট করা হয়েছে আন্ডার ডিসপ্লেতে । আন্ডার ডিসপ্লেতে থাকার কারণে ব্যবহারকারী থেকে খুব সহজেই ব্যবহার করে নিতে পারবে । বডির কালার এর সাথে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সরটিকে অনেকটা ম্যাচিং করেই সেট করা হয়েছে । ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর এর পাশাপাশি এখানে আমরা পাব ফেইস আনলকিং সিস্টেম । বর্তমান সময়ে আরও একটি জনপ্রিয় এবং অন্যতম সিকিউরিটি পদক্ষেপ হলো ফেইস আনলকিং সিস্টেম । এর পাশাপাশিও পাওয়া যাবে প্রক্সিমিটি , অ্যাক্সেলেরোমিটার , কম্পাস এর মত আরো অন্যান্য জনপ্রিয় সিকিউরিটি পদক্ষেপ ।
ডিসপ্লে কোয়ালিটি
স্মার্টফোনগুলোর অন্যতম আরো একটি ফাংশন হল ডিসপ্লে । ডিসপ্লে নামক ফাংশনটি অনেকের কাছে এলসিডি অথবা এলইডি নামেও পরিচিত । এই স্মার্টফোনটি এর ডিসপ্লে অথবা এলইডি কেমন হবে সেটা জানার আগ্রহ আমাদের সকলের মধ্যেই রয়েছে । আইপিএস টিএফটি এলসিডি প্যানেল ব্যবহার করা হয়েছে এই স্মার্টফোনটিতে । ডিসপ্লের ধরন ওয়াটার ড্রপ নচ এলসিডি । আকর্ষণীয় মানের এই ডিসপ্লের সাইজ 6.82 ইঞ্চি । ডিসপ্লেতে এইচডি রেজুলেশন রয়েছে 720×1640 পিক্সেল । এই বিষয়টি আমাদেরকে অনেকটাই আঘাত করতে পারে । এইচডি ডিসপ্লে ব্যবহার করা হলেও আমরা এখানে কিন্তু ঘাটতি পেয়ে যাবো শার্পনেসের । এলসিডি ডিসপ্লেটির ঘনত্ব রয়েছে 263 পিপিআই ডেনসিটি । স্মার্টফোনের ডিসপ্লেতে পাওয়া যাবে না নোটিফিকেশন লাইট এর সুবিধা । টাচস্ক্রিনে রয়েছে 60 হার্জের রিফ্রেশ রেট । এলসিডি প্যানেলটির এসপেক্ট রেটিও রেট এর পরিমাণ কিন্তু অনেক ভালো ।
মেমোরি / স্টোরেজ
একটি স্মার্টফোন কি পরিমানে স্পিড দিবে এবং স্মার্টফোনটিকে কি পরিমান দ্রুতগতিতে চালানো যাবে সেটি নির্ভর করে সম্পূর্ণভাবে মেমরি স্টোরেজ এর
উপর । অনেক ভালো ভালো স্মার্টফোন রয়েছে যেগুলোতে মেমরি স্টোরেজ ভাল না থাকার কারণে দ্রুত স্পিড পাওয়া যায় না । এর জন্য কিন্তু আমাদেরকে বিরক্তিকর একটা ঝামেলা পোহাতে হয় । এই স্মার্টফোনটির মেমোরি পারফরমেন্সের উপর তাকালে দেখতে পাওয়া যাবে 2 জিবি এবং 4 জিবি রেম । ইন্টারনাল মেমোরির রেম পারফরম্যান্স মোটামুটি মিডিয়াম কোয়ালিটির । রোম স্টোরেজে থাকছে 32 / 64 জিবি । মেমোরি পারফরম্যান্স মোটামুটি মিডিয়াম রেঞ্জের ভিতরে রয়েছে । তবে আপনি চাইলে ওটিজি ক্যাবলের মাধ্যমে আপনার পছন্দমত মেমোরি স্টোরেজ বাড়িয়ে নিয়ে ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন । তবে আপনি এখানে বিপুল পরিমাণে তথ্য সংগ্রহ করে রাখতে পারবেন না ।
গেমিং পারফরম্যান্স
স্মার্টফোনগুলো দেখার পরেই আমাদের ভিতরে সর্বপ্রথম যে প্রশ্নটি আগে সেটি হচ্ছে এই স্মার্টফোনটি দিয়ে কি গেমিং পারফরম্যান্স ভালো পাওয়া যাবে ? অনেকের মধ্যেই আমরা এই প্রশ্নটিই দেখতে পেয়ে থাকি । এমনকি ইনফিনিক্স হট 10 প্লে এই মডেলটির ক্ষেত্রেও একই প্রশ্ন অনেকের মাঝে দেখা যায় । যেহেতু স্মার্টফোনটিকে মিড রেঞ্জের তালিকায় রাখা হয়েছে । সেহেতো বলা যেতে পারে এই স্মার্টফোনটি দিয়ে ভালো মানের গেমিং পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে না । না পাওয়াটাও কিন্তু অনেকটাই অসাভাবিক এর কিছু নয় । এ বাজেটের স্মার্টফোনগুলোতে গেমিং আশা করাটা আমাদের মধ্যেও খুব কমই দেখা যায় । এই ডিভাইসটির মাধ্যমে অনলাইন গেম গুলো যেমন পাবজি আর ফ্রী ফায়ার এর মত অন্যান্য গ্রাফিক্সের গেমগুলোকে খেলা গেলেও পাওয়া যাবে না কিছুটা উন্নতমানের গ্রাফিক্স ডিজাইন ।
অফিশিয়াল প্রাইস
আন্তর্জাতিক মার্কেটসহ বাংলাদেশেও এই স্মার্টফোনটি অফিসিয়াল এবং আনঅফিসিয়াল রুপ দেখা যাবে । অফিশিয়াল প্রাইস কৌতুহল সবার মাঝেই কিন্তু রয়েছে । স্মার্টফোনটিকে মার্কেটে রিলিজ করা হয়েছে দুইটি মেমোরি পারফরম্যান্সে । 3 / 32 জিবি স্মার্টফোন টির অফিশিয়াল মূল্য 9 ,990 টাকা এবং 4 / 64 জিবি স্মার্টফোনটির অফিসে আর মূল্য 10 ,990 টাকা । এখন অনেকের মানেই আরো একটি প্রশ্ন রয়েছে আর সেটি হল স্বল্পমূল্যের স্মার্টফোন গুলোতে কি ভালো মানের পারফরম্যান্স পাওয়া যাবে । ইনফিনিক্স কোম্পানিতে সবসময় স্বল্পমূল্যের ভিতরে ভালো পারফরম্যান্স দিয়ে থাকে । যার দৃশ্যমান প্রমান আমরা এই মডেলটির মধ্যেই দেখতে পাই । স্মার্টফোনটি কিন্তু লো কোয়ালিটির রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে কিন্তু তাতে কি এখানে আমরা পেয়ে যাব উন্নত এবং ভালো মানের পারফরম্যান্স ফিচার । এই প্রাইস এর মধ্যে অন্যান্য মডেলগুলো কিন্তু এতটা ভাল পারফরম্যান্স দিয়ে থাকে না ।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন